এবারের নভেম্বর ক্রীড়াঙ্গনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যা কখনো হয়নি তা ঘটতে যাচ্ছে। ঘরের মাঠে ফুটবল, হকি ও ক্রিকেট জাতীয় দল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে। নভেম্বরজুড়েই ব্যস্ত সময় পার করবেন বিভিন্ন ইভেন্টের খেলোয়াড়রা। ফুটবলে জাতীয় দল ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে। ১৮ নভেম্বর উত্তেজনায় কাঁপবে দেশ। সেদিন সন্ধ্যায় এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের। দুটি ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। ১১ নভেম্বর থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিলেটে শুরু হলেও ১৯ নভেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ঢাকায় মিরপুর স্টেডিয়ামে। ২৭ ও ২৯ নভেম্বর প্রথম দুই টি-২০ ম্যাচ চট্টগ্রামে হবে। ২ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষটি। নভেম্বরে হকিতেও বাংলাদেশের বড় লড়াই। এর আগেও পাকিস্তান জাতীয় দল ঢাকায় খেলে গেলেও এই প্রথম ঢাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচ খেলবে। দুই দেশের জাতীয় দল কখনো এমন লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়নি। বিশ্বকাপ হকির বাছাইয়ের প্লে-অফ ম্যাচ খেলবে তারা। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ১৩, ১৪ ও ১৬ নভেম্বর। জনপ্রিয় তিন খেলার জাতীয় দল একই মাসে লড়বে। আর তা হবে কাছাকাছি সময়ে। ক্রীড়ামোদীদের মাঝথাকবে অন্যরকম। নভেম্বর আবার হকিতে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়ার মাস। ২৮ নভেম্বর ভারতে অনূর্ধ্ব-২১ বিশ্বকাপ হকির পর্দা উঠবে। যেখানে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের যুবারা। এটিই হবে যে কোনো হকির বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম অংশগ্রহণ। প্রশ্ন উঠতে পারে ঢাকায় তিন জাতীয় দলের খেলাকে ঘিরে কোনটি বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে। হকিতে পাকিস্তান বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি অলিম্পিক গেমসেও সোনা জিতেছে। বর্তমানে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও তাদের খাটো করে দেখার উপায় নেই। শক্তির বিচারে তারা এতটা এগিয়ে যে বাছাইপর্বের প্লে-অফের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর তাদের টপকিয়ে বাংলাদেশ যদি বাছাইপর্বে জায়গা করে নেয় তা হবে বিশ্ব হকির ইতিহাসে বড় অঘটন। যেটায় হোক ঢাকায় পাকিস্তান তিন ম্যাচ খেলবে এটাই বড় সুসংবাদ। তবে ম্যাচ ঘিরে তেমন উত্তেজনা থাকবে না। এখানে বাংলাদেশের হারের সম্ভাবনা বেশি।

১৩ নভেম্বর হবে ক্রীড়াঙ্গনের ব্যতিক্রমী দিন। প্রায় পাশাপাশি অবস্থিত দুই স্টেডিয়ামে ফুটবল ও হকির জাতীয় দলের খেলা। ফুটবলে প্রতিপক্ষ নেপাল আর হকিতে পাকিস্তান। খেলাধুলার ইতিহাসে এটিই হবে প্রথম ঘটনাএর আগে কখনো একই দিনে ঢাকাহকি স্টেডিয়ামে দুই জাতীয় দলের খেলা হয়নি। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে টেস্টটি হবে তা নিয়ে তেমন উত্তেজনা থাকবে বলে মনে হয় না

সত্যি বলতে কি ১৮ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে ফুটবল ম্যাচ ঘিরে এখন থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ম্যাচের দিন তো হবে অন্যরকম উত্তেজনা। অনেক দিন পর ঢাকায় খেলতে আসছে ভারত জাতীয় দল। সমমানের হলেও কেন জানি দীর্ঘ সময় ধরে ভারতকে হারাতে পারছে না বাংলাদেশ। মাঠে নামলেই খেলোয়াড়রা স্নায়ুচাপে ভোগেন। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ ফুটবলে সেমিফাইনালে ভারতকে হারানোর পর বাংলাদেশ জাতীয় দল আর জিততে পারেনি। এবারের মার্চে শিলংয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে হামজা দেওয়ান চৌধুরী খেলার পরও গোলশূন্য ড্র করেছে। এশিয়ান কাপ চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের কোনো খেলার সম্ভবনা নেই। তারপরও ভারত ম্যাচের গুরুত্ব অনেক। ২২ বছর পর ভারতকে হারাতে পারলে সব ব্যর্থতা শেষ হয়ে যাবে এমনটিই বলছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। অতীতে যায় ঘটুক প্রত্যাশা এবার জয় আসবেই। হামজা, সামিত, জায়ান আহমেদকে নিয়ে গড়া বাংলাদেশ এবার ভারতকে কাঁদাবে এ প্রত্যাশা সবার। কার্ড দেখায় ফাহমিদুল ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারবেন না। দুটি ম্যাচের জন্য প্রাথমিক দলও ঘোষণা করেছেন কোচ কাবরেরা।

নভেম্বরে ঢাকায় নারী বিশ্বকাপ কাবাডি হবে। এটিও এক ইতিহাস। কেননা এই প্রথম কাবাডির কোনো বিশ্বকাপ আয়োজন করছে বাংলাদেশ। এশিয়ান আর্চারিও হবে। কিন্তু ফুটবল, ক্রিকেট ও হকির সঙ্গে তা তুলনা চলে না। একই মাসে বড় তিন জাতীয় দলের খেলা বলেই নভেম্বর মাসটি হবে সত্যি অন্যরকম।