অপরিকল্পিতভাবে ইউটার্নে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বগুড়া মহাসড়ক। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের। প্রতিদিনই সড়কে লেগে থাকছে দীর্ঘ যানযট। নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হচ্ছেন মানুষ। যাচ্ছে নিরীহ প্রাণ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়ন মহাসড়কেই ১০৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে করে নিহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, মহাসড়ক থেকে অপরিকল্পিতভাবে ইউটার্ন বন্ধ করা না গেলে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ছোনকা ও চান্দাইকোনাসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে বেশ কিছু ফিলিংস্টেশন ও হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট। সড়ক বিভাগের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে স্থাপনার সামনের সড়ক থেকে সরিয়ে ফেলা হয় রোড ডিভাইডার। অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয় ইউটার্ন। বাধ্য করা হয় বিভিন্ন কোম্পানির যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাককে সেখানে যাত্রাবিরতি করাতে। সড়কের উভয় পাশ দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন বিরতি দেওয়ায় দীর্ঘসময় লেগে থাকছে যানজট। আর এতে করে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে গোটা মহাসড়ক।

সূত্র জানায়, অনুমোদন বন্ধ থাকার পরেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ছোনকা এলাকায় ফিলিংস্টেশন স্থাপন করে নাবিল গ্রুপ। পাশাপাশি করা হয় হাইওয়ে রেস্টুরেন্টও। পরে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে মালিকপক্ষ সামনের সড়ক থেকে রোড ডিভাইডার তুলে ফেলে সেখানে একটি অপরিকল্পিত ইউটার্ন তৈরি করে। এরপর বিভিন্ন কোম্পানির যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাককে সেখানে যাত্রাবিরতি দিতে বাধ্য করা হয়। শুধু নাবিল হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট নয়, চান্দাইকোনায় হানিফ হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট ও অভি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মতো আরও অনেক হোটেল মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠেছে। এসব এলাকায় ইচ্ছেমতো ইউটার্ন তৈরি করে নেওয়া হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়ন এর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) শহিদ উল্লাহ জানান, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ছোনকাচান্দাইকোনাসহ বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র ইউটার্ন তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়কের রোড ডিভাইডার কেটে হোটেল এবং ফিলিংস্টেশনে প্রবেশ করার পথ তৈরি করা হয়েছেবাধ্য করা হচ্ছে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে গাড়ি প্রবেশের জন্যযে কারণে সড়কে নিয়মশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছেএকই সঙ্গে যানজটপ্রাণহানিসহ মহাসড়কে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে

তিনি বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে হাইওয়ে পুলিশকে দায়ী করা হচ্ছেঅথচ হোটেল এবং ফিলিংস্টেশন ব্যবসায়ীরা সড়ক বিভাগকে ম্যানেজ করে ডিভাইডার কেটে গাড়ি প্রবেশ করার পথ করে নিয়েছেনিরাপদ মহাসড়ক গড়ে তুলতে হলে ওসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবেনাবিল হাইওয়ে হোটেলের শিফট ম্যানেজার রুহুল আমিন জানান, এই রেস্টুরেন্ট এখনো সেভাবে চালু হয়নিনাবিল কোস্পানির বাস, শ্যামলী পরিবহনের কিছু বাসঅরিন কোস্পানির বাস এই হোটেলে যাত্রাবিরতি দেয়আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীকোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। এই হোটেলে আওয়ামী লীগের কোনো মিটিং হয়নি।